কোড অব কনডাক্ট

WRC এর কোড অব কনডাক্ট

WRC এর কোড অব কনডাক্ট (Code of conduct) অনুসারে নিম্নোক্ত বিষয়াবলী শ্রমিক অধিকারের ক্ষেত্রে মূল বিষয় হিসেবে বিবেচিত হয়। WRC এর সাথে চুক্তিবদ্ধ বেশির ভাগ বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর কোড অব কনডাক্ট এই মানদন্ডগুলো অনুসরন করে থাকে। WRC ফ্যাক্টরী তথ্যানুসন্ধান চালানোর সময় নিম্নোক্ত মানদন্ডগুলো অনুসরন করে থাকে।

  1. বেতন/ মজুরী ও সুযোগ সুবিধা: নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের বুঝতে হবে যে, শ্রমজীবীদের বেতন/ মজুরী এমন হতে হবে যা দ্বারা তারা তাদের মৌলিক চাহিদা সমূহ মেটাতে সক্ষম হয়। নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ কোন দেশের প্রচলিত আইন কানুন মেনে এমন একটি ক্ষেত্রের সৃষ্টি করতে হবে যাতে করে শ্রমজীবী মানুষ তাদের প্রাপ্ত মজুরী দিয়ে তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে সমাজে সম্মানজনকভাবে অবস্থান করতে পারে।
  2. শ্রম ঘন্টা: ঘন্টা হিসেবে/ কোটা ভিত্তিক হিসেবে কর্মরত শ্রমিক এর ক্ষেত্রে ১) ধ) প্রতি সপ্তাহে ৪৮ ঘন্টা অথবা ন) প্রস্তুতকারী দেশের প্রচলিত বিধি অনুযায়ী স্বাভাবিক কর্ম ঘন্টার চেয়ে বেশী কাজ করতে হবে না, ২) প্রতি সাতটি কর্ম দিবসে অন্তত এক(১) দিন কর্ম বিরতি সহ অন্যান্য ছুটি প্রাপ্য হবেন।
  3. ওভার টাইম বা বাড়তি কাজের ভাতা: শ্রমজীবীদের / শ্রমিকদের নিয়মিত কর্মসম্পাদনের পাশাপাশি স্বেচ্ছায় বাড়তি কাজ করার সুযোগ দিতে হবে। শ্রমিকদের প্রাত্যাহিক কর্মের জন্য প্রাপ্য ভাতাদির পাশাপাশি তাদের কৃত অতিরিক্ত বা বাড়তি কাজের জন্য এমন হারে অতিরিক্ত ভাতা প্রদান করতে হবে যা প্রস্তুতকারী দেশের প্রচলিত আইন ও বিধি দ্বারা সিদ্ধ এবং যে সমস্ত দেশে এই ধরনের আইনের প্রচলন নেই, সেখানে বাড়তি কাজের জন্য মজুরী হবে স্বাভাবিক ঘন্টা প্রতি মজুরীর অন্তত পক্ষে দেড় গুন (১১/২) হারে ।
  4. শিশু অধিকার: নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ কোন ক্ষেত্রেই ১৫ (পনের) বছরের চেয়ে কম বয়সী কোন ব্যক্তিকে নিয়োগ করবেন না (অথবা ১৪ বছর যেখানে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা কর্তৃক উন্নয়নশীল দেশের জন্য প্রনয়ণকৃত নীতিমালা অনুসারে, অথবা প্রস্তুতকারী দেশের প্রচলিত এ সংক্রান্ত আইন কর্তৃক স্বীকৃত ব্যতিক্রম অনুসারে)। যে ক্ষেত্রে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনের সর্বনিম্ন বয়স কর্ম প্রত্যাশীর সর্বনিম্ন বয়সের চেয়ে বেশী সেক্ষেত্রে উচ্চতর বয়স কর্ম প্রার্থীর যোগ্যতা হিসেবে বিবেচিত হবে। নিয়োগকর্তাকে সরকারী, বেসরকারী সংস্থা ও মানবাধিকার সংগঠন গুলোর সাথে পরামর্শ করতে হবে এবং এই আইন প্রয়োগের ফলে কর্মচ্যুত শিশুদের মধ্যে যে ঋণাত্মক প্রভাব পড়বে তা কমিয়ে আনার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
  5. বল প্রয়োগপূর্বক শ্রম: কোন অবস্থাতেই কারো ইচ্ছার বিরুদ্ধে বা কাউকে আবদ্ধ অবস্থায় বা কোন ধরনের বল প্রয়োগ করে কর্ম সম্পাদনে বাধ্য করা যাবে না।
  6. স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা: নিয়োগকর্তা তার প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মীদের জন্য দূর্ঘটনার ঝুকিমুক্ত নিরাপদ ও স্বাস্থ্য সম্মত কাজের পরিবেশ প্রদান করবেন। যাতে শ্রমিকদের কাজ করার সময় অথবা কাজ করার দরুন পরবর্তী সময়ে কোন প্রকার স্বাস্থ্যহানি না ঘটে ।
  7. অবৈষম্য: চুক্তিবদ্ধতা, মজুরী, সুযোগ সুবিধা, অগ্রসরতা, শৃঙ্খলা, চাকুরীচ্যুতি, অবসর গ্রহণ ইত্যাদির কোনটির ক্ষেত্রেই স্ত্রী-পুরুষ, ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, যৌনতা, বয়স, জাতীয়তা, রাজনৈতিক মতাদর্শ প্রভৃতির ভিন্নতার কারণে কোন কর্মীর মধ্যে কোনরূপ বৈষম্য বা ভেদাভেদ করা যাবে না।
  8. নিপীড়ন বা নির্যাতন: প্রত্যেক কর্মীকেই সমান মর্যাদা ও সম্মানজনক হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। কোন কর্মীকেই মৌখিক, শারীরিক, মানসিক ও যৌন নির্যাতন ও নিপীড়ন করা যাবে না। নিয়োগকর্তা কোন প্রকার শারীরিক শাস্তির ব্যবস্থাও করতে পারবেন না।
  9. সংগঠন বা ইউনিয়ন করার স্বাধীনতা এবং যৌথ দরকষাকষি: কর্মীর অধিকার কে সম্মান জানিয়ে তাদের সংগঠিত হয়ে দাবী দাওয়া জানানো ও ইউনিয়ন গঠন করার স্বাধীনতা প্রদান করতে হবে। কোন কর্মীকেই ব্যক্তিগত বা দলবদ্ধভাবে দাবী দাওয়া জানানোর জন্য নিবৃতকরা, হয়রানিকরা, নিপীড়ন বা কর্মচ্যুত করা যাবে না। নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ কর্মীদের সংগঠিত হওয়া থেকে নিবৃত করার জন্য কোন সরকারী বা বেসরকারী প্রতিষ্ঠানকে তাদের ক্ষমতা প্রয়োগের জন্য সহযোগিতা করতে পারবেন না। কর্মীদের তাদের চাহিদা/ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ইউনিয়নে যোগ দেওয়ার সুযোগ দিতে হবে। ইউনিয়ন সংগঠককে নিয়োগকর্তা তার ফ্যাক্টরীতে প্রবেশের অবাধ সুযোগ দিতে হবে ।
  10. নারী অধিকার:
    • একজন নারী কর্মী পুরুষের পাশাপাশি যে কোন ক্ষেত্রে কর্ম সম্পাদনের সমান সুযোগ পাবেন, সমহারে ভাতা পাবেন, সমভাবে বিবেচিত হবেন এবং সম্পাদিত কর্মের জন্য সমভাবে মূল্যায়িত হবেন।
    • নারী কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে গর্ভধারন পরীক্ষার প্রয়োজন হবে না কিংবা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ এ ধরনের পরীক্ষার জন্য দাবী করবেন না।
    • মাতৃত্বকালীন ছুটি গ্রহনকারী নারী কর্মীরা কোন রূপ কর্মচ্যুতি বা কর্মচ্যুতির হুমকির, জেষ্ঠ্যতা হ্রাস, ভাতাদি হ্রাস প্রভৃতির স্বীকার হবেন না এবং ছুটি শেষে পূর্বের পদে একই বেতন ভাতাদি ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা সহ কর্মে যোগ দিতে পারবেন।
    • কর্মীদের কে জন্ম নিরোধীকরণ পদ্ধতি গ্রহণে চাপ বা কোন রকম বল প্রয়োগ করা যাবে না।
    • কর্মীদের বিভিন্ন ধরনের আঠা, দ্রাবক বা এমন কোন বিপজ্জনক কাজে যুক্ত করা যাবে না যার ফলে প্রজনন স্বাস্থ্যসহ তাদের জীবনে ঝুকির সম্ভাবনা থাকে।
    • নিয়োগকর্তা নারী কর্মীদের মাতৃত্বকালীন প্রযোজ্য সকল সুযোগ সুবিধা প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।